প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দ্বিতিয় ধাপে পরীক্ষা হবে আগামী ২০ মে। সেই ধাপে ৩০ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তৃতীয় ধাপে ৩ জুন ৩১ জেলায় এই নিয়োগ পরীক্ষা হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষাকে সামনে রেখে বিগত সময় প্রশ্ন ফাঁস, জালিয়াতি, আধিপত্য বিস্তার, কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় এবার সতর্ক অবস্থানে রয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, কোন পরীক্ষার্থী কোন সেটের প্রশ্ন পাবেন, তা পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগে জানতে পারবেন। ভিন্ন সেটে পরীক্ষা দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগে নির্ধারিত আসন গ্রহণের নির্দেশনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষাকেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের রঙিন ছবি ও স্বাক্ষর এবং রঙিন ছবিযুক্ত হাজিরা শিটে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার যেসব শিক্ষক নিয়োগ পাবেন তারা আগামী প্রায় ৩৫ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান পরিচালনায় নিয়োজিত থাকবেন। তাদের হাতেই গড়ে উঠবে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের কারিগর। তাই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
তিনি জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম নিয়োগবিধি অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। প্রার্থীদের রোল নম্বর, আসন বিন্যাস, প্রশ্নপত্র প্রেরণ ও মুদ্রণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল প্রস্তুতসহ যাবতীয় কাজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে থানায় সোপর্দ করা অথবা থানা বা গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের বিষয়ে সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। এতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করুন।
এছাড়া, ডিপিই থেকে পরীক্ষার্থীদের ১৯টি সাধারণ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এই প্রবেশপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে।
২. পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১ এক ঘণ্টা আগে প্রার্থীকে নির্ধারিত আসন গ্রহণ করতে হবে এবং পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কক্ষ ত্যাগ করতে পারবেন না।
৩. প্রবেশপত্র ব্যতিরেকে কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা খড়ি জাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক্স হাত ঘড়ি বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, যোগাযোগ যন্ত্র বা এই জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যদি কোনো পরীক্ষার্থী উল্লিখিত দ্রব্যাদি সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে, তবে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৪. পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কক্ষে অবস্থানের সময় অবশ্যই উভয় কান উন্মুক্ত রাখতে হবে।
৫. আবেদনপত্রে পরীক্ষার্থীর প্রদত্ত ছবি হাজিরা শিটে থাকবে এবং ইনভিজিলেটর এই ছবি দিয়ে পরীক্ষার্থীকে যাচাই করবেন। ভুয়া পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬. আবেদনপত্রে প্রার্থীর দেওয়া স্বাক্ষরের সঙ্গে পরীক্ষার হাজিরা শিটে এবং ওএমআর শিটে দেওয়া স্বাক্ষরসহ সব তথ্যে মিল থাকতে হবে