
নিজস্ব প্রতিবেদক: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইইউসি, শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে সরকারি দলের নগ্ন হস্তক্ষেপ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ। তারা দাবী করেন এর মাধ্যমে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ব্যাহত হবে।
রবিবার ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরের একটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বক্তব্য তুলে ধরেন উক্ত সম্মেলনের আহবায়ক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রবিউল ইসলাম রুবেল। তিনি লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। উক্ত বক্তব্য প্রেস বিজ্ঞবি হিসেবে তুলে ধরা হল।
জাতি গঠন ও উচ্চ শিক্ষার মত মৌলিক চাহিদা পূরনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তার মধ্যে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষাবান্ধব, গুনগত ও মানসম্পন্ন অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, গত ৮ সেপ্টেম্বর উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রাস্টিবোর্ড ভেঙ্গে দিয়ে অবৈধভাবে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত, বেআইনী ও অবৈধ। চর দখলেরমত একটি সম্ভাবনাময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শন।
এ দেশের সচেতন সমাজ মনে করে নৈতিক মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় সুনাগরিক তৈরির মাধ্যমে জাতি গঠনে অগ্রনায়ক। শিক্ষার মূল অধিকার নিশ্চিত করার ধারাবাহিক সাফল্যের পরও অবৈধভাবে ট্রাষ্টিবোর্ড দখল করা, এটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের নামান্তর। যা এরইমধ্যে ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত হিসেবে সুশীল সমাজে ধিকৃত হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা সবিনয়ে বলতে চাই, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা প্রদানের অংশ হিসেবেই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ বলে আমরা মনে করছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভকরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছে এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই দখলবাজ ট্রাষ্টী বোর্ডকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং পূর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এখানে জোর করে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বসানো হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব আতিকুল ইসলামকে। তাঁর প্রতিও আমাদের উদাত্ত আহ্বান, অনতিবিলম্বে অবৈধ ট্রাস্ট ভেঙে দিয়ে পূর্বতন মূল বোর্ডকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন। আপনি একজন জনপ্রতিনিধি, সংগঠক ও সফল ব্যবসায়ী আপনি স্ব-অবস্থানে সম্মানীত এবং আপনার কাজ জনগণের সেবা করা। প্রতিষ্ঠান দখল করা আপনার কাজ নয়। তাই আপনি আপনার সম্মানের জায়গায় ফিরে যান, প্রতিষ্ঠানকে পূর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট ফিরিয়ে দিন। মনে রাখবেন ক্ষমতার অপব্যবহার ও জোর করে দখল করা যায় কিন্তু সম্মান অর্জন করা যায় না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে, আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আর অতিতের ন্যায় আগামিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের সাথে নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মত কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হবো।
আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে আগত বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সুধীবৃন্দকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।