
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেছেন, সততা, সাহসিকতা ও আদর্শের মৃত্যু নেই। গণতন্ত্রের জন্য, ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য, সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুগে যুগে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছে, আত্মোৎসর্গ করেছে যৌবন, জীবনের স্বর্ণালী সময়গুলো রাজপথে অতিক্রম করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের ৩১ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল সংলগ্ন মিজান স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত স্বরণসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির কো-অর্ডিনেটর মোঃ আখলাকুর রহমান মাইনুর সভাপতিত্বে এবং ত্রাণ উপকমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, ১৯৯১ সালের ২৭ অক্টোবর শান্তির জন্য প্রগতির পথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মিছিলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ছাত্রদলের গুলিবর্ষণে ৩০ অক্টোবর শাহাদাৎ বরণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ মিজানুর রহমান মিজান।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা শহীদ মিজানুর রহমান মিজানের জীবন কেড়ে নিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লড়াই বৃথা যায়নি। বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মীদের বুকের রক্তে লেখা সংগ্রামের ফলাফল।
বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন-অর্জন-অগ্রযাত্রা ছাত্রসমাজের পরম পাওয়া। এ আলোকশিখা অনির্বাণ জ্বলতে থাকুক তারুণ্যের উদযাপনে মুখরিত বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষাঙ্গনে।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, ছাত্রদল মিজানের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালায়। সেই দিনটি ছিল আমাদের জন্য বেদনাবিধুর। তিনি স্কুলজীবন থেকেই ছাত্রলীগ করতেন। ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রশ্নে মিজান কখনও আপস করেননি। বিদ্যাপিঠে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রসৈনিক। মিজান আমাদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ সম্পাদক বলেন, সন্ত্রাস ও নাশকতা দিয়ে রাজনৈতিক অপশক্তি বিএনপির জন্ম, তাদেরই ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে, প্রাণ দিতে হয়েছে মিজানদের। আমার ভাইয়ের রক্ত শুকিয়ে যায়নি আজও। বিচার হয়নি খুনি সন্ত্রাসীদের।
১৯৬৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন মিজানুর রহমান মিজান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
১৯৯১ সালের ২৭ অক্টোবর সন্ত্রাসবিরোধী মিছিলে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ৬৮ ঘণ্টা মৃত্যর সঙ্গে লড়াই করে ৩০ অক্টোবর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
স্মরণ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহিদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন,বাংলাদেশ আওয়ামি সেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সালেহ্ মোহাম্মদ টুটুল, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস, ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম ও সাধারণ মুহাম্মাদ আবু হাসিব মুক্তসহ বিভিন্ন হলের নেতৃবৃন্দ।
এসময় মিজানের সহপাঠী ও বন্ধুদের স্মৃতিচারণে উঠে আসে তার অবদান। এছাড়া ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।